প্রেম স্বর্গীয় না, নরকীয়।

শীতের রাত। কেমন যেন চাপা একটা কান্না শোনা যাচ্ছে।
কারো বাচ্চা কাঁদছে।
কার বাচ্চা? বেড়ালের না, মানুষেরই মনে হচ্ছে।
সকালে কোনো এক বাড়ির বুয়ার কৌতুহলটা খুব বেশি হলো।
এদিক ওদিক তাকিয়ে আবিষ্কার করলেন দু বিল্ডিং এর মাঝখানে যে চিপা জায়গা সেখানে একটা পুটলি থেকে কান্না আসছে।
কারো বাসা থেকে ফেলা হয়েছে বোধকরি।
অথবা রাস্তা থেকে ছুঁড়ে মেরেছে।
একজন দারোয়ান অনেক কষ্ট করে ওই চিপা জায়গাতে গিয়ে পুটলিটা উদ্ধার করে আনল।
মানুষের বাচ্চা।
নবজাতক।
হাসপাতালে নেয়া হলো।
একদিন থেকে মরে গেল।
একটা সারা রাত সে কেঁদেছে।
যার বাবা, যার মা ফেলে গেছে - তাকে কে কোলে নেবে?
কেঁদেছে সেই শীতের রাতে যে রাতে কুকুরও খোলা আকাশের নীচে থাকে না, উষ্ণতা খুঁজে নেয়।
বাচ্চাটা মায়ের দুধ পায়নি। উষ্ণতা না। মানুষের এত বড় বড় দালানে ছোট্ট একটা জায়গাও হয়নি তার।
এটা কাছে আসার না বলা সত্য গল্প।
জি সত্য গল্প।
গত কয়েক বছরে এমন খবর অনেকগুলো চোখে পড়েছে।
ডাস্টবিনে বাচ্চা। ছাদ থেকে ফেলে দেয়া থেতলে যাওয়া বাচ্চা। কুকুরের মুখে মানুষের বাচ্চা - এগুলো কোথা থেকে আসে?
হারামভাবে কাছে আসা থেকে।
হারামজাদা বলে মানুষ গালি দেয় ওই বাচ্চাটাকে। কিন্তু ওই বাচ্চাকে পেটে ধরল যারা তাদের দোষ নেই?
যে ক্লোস-আপ কাছে আসার গল্প শোনাচ্ছে সে নির্দোষ?
শয়তান যে শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের প্রেম করতে শেখায় তার গোঁফে ওই বাচ্চাগুলোর রক্ত নেই?
গর্ভবতী মা হাসপাতালে যাওয়ার অ্যাম্বুলেন্স পায় না, কিন্তু ২০০ রিকশা কাপলদের জন্য ফ্রি রাইড দেয়। ক্যাম্পেইনের লক্ষ্য - রিকশা ভ্রমনের মাধ্যমে যুগলদের কাছে আসার গল্প তুলে ধরা।
তারপর? বাচ্চা অথবা ভ্রুণটাকে মেরে ফেলার গল্প কে বলবে? কে শুনবে?
প্রেম স্বর্গীয় না, নরকীয়। ওই বাচ্চা তার বাপ-দাদা-দাদী, মা-নানা-নানী, ভ্যালেন্টাইনের বণিক সংঘ, আর সাদাসিদে শিক্ষকদের জাহান্নামে নেবে।
নিশ্চিত নেবে। নেবেই নেবে।
পৃথিবীতে রাত থাকলেও আল্লাহ দেখেন। আল্লাহ খুব ভালো জানেন অশ্লীলতা কে ছড়ায়। কে প্রেম-ভালোবাসা নামের অসভ্যতা সহ্য করে যায়।
প্রেম অপবিত্র। ভালোবাসা নোংরা, পুঁতিগন্ধময়। যতক্ষণ না বিয়ে হচ্ছে।
ভাইয়েরা, আল্লাহর ওয়াস্তে একটা কাজ করবেন? এই গল্পগুলো আপনাদের মাসজিদের ইমামকে একটু শোনাবেন?
হতে পারে ওই বাচ্চাটার দাদা, নানা আপনার মাসজিদেই নামায পড়ে। হতে পারে না, ভাই? হতে পারে না?
হতে পারে না, যে ওই দাদা, নানা - ওই মুরুব্বি তার সন্তানটাকে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিলে আর তাদের অবৈধ পথে কাছে যাওয়া লাগত না?
ধরেন, ওই মুরুব্বি যদি ধমকে নিজের সন্তানকে বলত, প্রেম করবি না। কোনো মেয়ের জীবন নষ্ট করবি না। বয়স হলে বিয়ে দেব। কোনো ছেলের সাথে ঘুরবি না, ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দেব।
তাহলে কি ওই বাচ্চাটাকে সারা রাত অভিশাপ দিতে হতো এই পাপের শহরকে?
বোনেরা, একটা কাজ করবেন? আপনার যে বান্ধবী প্রেম করে তাকে একটু এই গল্পগুলো শোনাবেন? কাছে আসতে আসতে কী হয় সে জানুক।
হতেও তো পারে, এই পুটলির বাচ্চাটা আপনার বান্ধবীর সন্তান। সে আপনাকে জানায়নি। লজ্জায়। পাপের পরে পাপ। একটা মানুষের বাচ্চাকে সে শীতের রাতে রাস্তায় ফেলে দিয়েছে। হতে পারে না?
হতে পারে না আপনার একটা কথা এমন আরেকটা বাচ্চার জীবন বাঁচাবে? সে হারামজাদা হবে না। মা-বাবা-দাদা-দাদী-নানা-নানীর নয়নের মনি হবে।
মুখ খুলুন ভাইয়েরা, বোনেরা। বিয়ের ছাড়া যে কোনো সম্পর্ককে 'না' বলুন। ক্লোস-আপের অনেক টাকা, ওর গলায় অনেক জোর।
আমাদের টাকা নেই। পত্রিকা নেই। টিভি নেই। কিন্তু আমাদের আল্লাহ আছেন। হয়ত সমাজ বদলাবে। হয়ত মানুষ কাছে আসার গল্পের সমস্যা বুঝতে পারবে।
যদি নাও বোঝে, সমাজটা নাও বদলায় - আমরা অন্তত আল্লাহর গজব থেকে বাঁচার একটা অজুহাত পাব।

Comments

Popular posts from this blog

টাইলস নিয়ে সব সমস্যার সমাধান

Protected health information

Open DNS :: Easy and Fast